ভোলা প্রতিনিধি ॥ ভোলায় গরম বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ডায়রিয়ার প্রাদুর্ভাব বেড়ে গেছে। মঙ্গলবার থেকে বুধবার (৭ এপ্রিল) পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে হাসপাতাল ভর্তি হয়েছে আড়াই শতাধিক রোগী। এক মাসে আক্রান্ত সংখ্যা দেড় হাজার। এদিকে প্রয়োজনীয় শয্যার অভাবে আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে হাসপাতালের মেঝেতে রেখে। নেই স্বাস্থ্যসম্মত পরিবেশ বা স্বাস্থ্যবিধি মানার বালাই। হঠাৎ করেই রোগী বেড়ে যাওয়ায় চিকিৎসা দিতে হিমশিম খাচ্ছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। বিপুলসংখ্যক রোগীর সুচিকিৎসা নিশ্চিত করতে সেবা বাড়ানোর দাবি স্বজনদের। আর রোগীর সেবায় সর্বোচ্চ চেষ্টা অব্যাহত রাখার কথা জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ। ২৫০ শয্যার ভোলা সদর হাসপাতালে ডায়েরিয়া ওয়ার্ডে শয্যা সংখ্যা ১০টি। গত ২৪ ঘণ্টায় (বুধবার সকাল ৯টা পর্যন্ত) সদর হাসপাতালে ডায়েরিয়া আক্রান্ত রোগী ভর্তি হয়েছে ৯৭ জন। আগের রোগীসহ চিকিৎসাধীন আছে ১১২ জন। শয্যার অভাবে এসব রোগীকে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে বিভিন্ন ওয়ার্ডের করিডরের মেঝেতে রেখে। বিছানাসহ প্রয়োজনীয় অন্যান্য জিনিসপত্রের অভাবে নানা দুর্ভোগে পড়তে হচ্ছে রোগী ও স্বজনদের। গত এক সপ্তাহ ধরে প্রতিদিনই বাড়ছে রোগীর সংখ্যা। এদিকে সদর হাসপাতালের মতোই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সগুলোতেও ডায়েরিয়া আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বেড়েছে। হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. সিরাজ উদ্দিন জানান, গত সাত দিনে ৪১৬ জন রোগী চিকিৎসা নিয়েছে। আর মাসে ভর্তি রোগীর সংখ্যা ছিল এক হাজার ৪৯০ জন। জানুয়ারী থেকে এ পর্যন্ত ২ হাজার ৪৯৫ জন রোগী চিকিৎসা নিয়েছে। গত এক মাসে আক্রান্তের সংখ্যা বেশি। এদিকে গত ২৪ ঘণ্টায় দৌলতখানে ৩০ জন, বোরহানউদ্দিনে ৩৫ জন, চরফ্যাসনে ৩০ জন ও লালমোহনে ১৪ জনসহ জেলায় মোট আড়াই শতাধিক রোগী ডায়েরিয়ায় আক্রান্ত হয়ে ভর্তি হয়েছে। দুর্ভোগে কমাতে শয্যা সংকট দূর করাসহ সেবার মান বাড়ানোর দাবি সংশ্লিষ্টদের। আর হঠাৎ রোগী বেড়ে যাওয়ায় সেবা নিশ্চিত করতে হিমশিম খাচ্ছে স্বাস্থ্যকর্মীরাও। ডায়েরিয়া ওয়ার্ডেও দায়িত্বে থাকা সেবিকারা জানান, এ অবস্থা চলতে থাকলে জনবল বাড়াতে হবে। ১২০ জন রোগীর জন্য ৩ জন নার্স দায়িত্ব পালন করছে। এ অবস্থায় সঠিক সেবা দেয়া তাদের জন্য চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রয়োজনীয় ওষুধপত্র থাকলেও শয্যার অভাব চরম আকার ধারণ করেছে। জনবল ও শয্যা সংকটের মধ্যেও সর্বোচ্চ সেবা নিশ্চিশের চেষ্টা চলছে বলে সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. রুপম সরকার সোহাগ। তিনি জানান, গরম বেড়ে যাওয়ায় ও ফুড পয়জোনিংয়ের কারণে ডায়েরিয়ার প্রাদুর্ভাব বেড়েছে।
Leave a Reply